আগেও অনেকবার পাহাড়ে, এমনকি খাগড়াছড়িতেও গিয়েছি, কিন্তু বর্ষায় পাহাড়ের সজীবতা দেখার ইচ্ছা ছিল অনেক দিন থেকেই। আমরা কয়েক বন্ধু মিলে বৃষ্টিভেজা বন, সবুজ পাহাড় আর নদী দেখার জন্য আষাঢ়ের প্রথম দিনে রওনা হয়ে গেলাম খাগড়াছড়িতে।
যে রাস্তা দিয়ে খাগড়াছড়ি যেতে হয়, সেটাও দেখার মতো। রাঙামাটি অথবা বান্দরবানের মূল শহরে যাওয়ার চেয়ে খাগড়াছড়িতে যেতে অনেক বেশি পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়। এখানে যাওয়ার সময় শুধু পাহাড় নয়; ঝরনা, প্যাগোডা, জুমঘরসহ অনেক কিছুই চোখে পড়বে।
তাই রাস্তায় চোখ খোলা রেখে যেখানে ইচ্ছা থেমে ছবি তুলতে শুরু করে দিলাম। বৃষ্টির সময় পাহাড়গুলোকে সবুজরূপে দেখা গেল। নদী ও ঝরনাগুলোও পরিপূর্ণ প্রমত্ত রূপ নিয়ে হাজির। পথে বেশ কিছু প্যাগোডাও চোখে পড়ল। তবে দিনের আলো থাকতে থাকতে পৌঁছানোর তাড়া থাকায় বেশিক্ষণ থামা গেল না।
পাহাড়ের কোলে দূরে একটি জুমঘর অথবা দূরে পাহাড়ের চূড়ায় কর্মরত পাহাড়িদের দেখতে দেখতে চলে এলাম খাগড়াছড়িতে ঢোকার প্রবেশপথে। আলুটিলাতে স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেও নামকরণের শানে নজুল জানা গেল না। তবে এটুকু জানা গেল, আলুটিলা পার্ক ও এর মধ্যে অবস্থিত গুহা প্রধান পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আলুটিলার গুহাটি পানির স্রোতের কারণে সৃষ্টি। এই গুহার মধ্য দিয়ে পাহাড়ের এক পাশ থেকে আরেক পাশে হেঁটে যাওয়া যায়। এখানে গাইড আছে, মশালও কিনতে পাওয়া যায়। সুতরাং মশাল জ্বালিয়ে গাইডের সঙ্গে আমরা চলে গেলাম হাঁটু পানি ভেঙে গুহার ভেতরে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট গুহার ভেতর দিয়ে হাঁটার পর বেরিয়ে এলাম অন্যদিকে, গা ছমছম করা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ঝড়বৃষ্টির সময় গুহাতে পানির স্রোত অনেক বেশি থাকে এবং মাঝেমধ্যে পুরো গুহা পানিতে ভরে যায়। সে জন্য আকাশ দেখে ঢোকা উচিত। এখানে একটি পিকনিক স্পটও আছে, ভাড়া নিয়ে এটা ব্যবহার করা যায়।
আলুটিলা ঘুরে আমরা হোটেল থেকে হাত-মুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম শহরে ঘুরতে। সৌভাগ্য যে আমাদের, চাকমা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসেছিলাম। তারা আমাদের প্রথমেই নিয়ে গেল মারমাদের একটি রেস্তোরাঁ ‘সিস্টেম ফ্যামিলি হোটেল’-এ খাওয়ার জন্য।
কখনো ভাবিনি এ রকম একটি ঘরোয়া রেস্তোরাঁ পাব খাগড়াছড়িতে এসে। অনেক বাঙালিও এখানে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য আসেন। এখানে বাঙালি খাবারের পাশাপাশি পাহাড়ি খাবারও পাওয়া যায়। আমরা যে যার মতো খেয়ে নিলাম। যেমন, কেউ কপি বাঁশের তরকারি ও মুরগির ঝোল, আবার অনেকে আগ্রহ নিয়ে পাহাড়ি রান্না খেল। যারা ঝাল সহ্য করতে পারে, তাদের জন্য সুবিধা হবে খেতে। কারণ, পাহাড়ি রান্না ঝাল ছাড়া কল্পনাই করা যায় না।
এরপর চলে গেলাম চেঙ্গি নদীর তীরে সময় কাটাতে। বৃষ্টির সময় না এলে চেঙ্গির আসল রূপ দেখা যায় না। সমতলের নদী থেকে এটা পুরো আলাদা—অনেক বেশি বাঁক আর স্রোত। বৃষ্টির পরে প্রমত্তা নদীতে গাছের গুঁড়ি, বাঁশ চোখে পড়ল। তবে বৃষ্টি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই চেঙ্গি নদী আবার তার শান্ত রূপে ফিরে এল।
রাতে আমরা জামতলার একটি চাকমা হোটেলে গেলাম। এখানে আমাদের চাকমা বন্ধুদের পরামর্শে ভুনা শামুক খেলাম, চিংড়ি মাছের মতো খেতে। তবে বেশি মিল পাবেন কাঁকড়ার স্বাদের সঙ্গে।
পরদিন সকালে উঠে রওনা দিলাম ছোট মেরুং বাজারের দিকে। এখান থেকে আরও ভেতরে গিয়ে জুম চাষ দেখলাম এবং জুমঘরে বসে পাহাড়ি চাষি ও বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করলাম। এখানকার বেশির ভাগ আদিবাসী সরাসরি জুম চাষের সঙ্গে জড়িত। জুমে প্রথমে পাহাড় পুড়িয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে তার গর্ত করে, প্রতিটি গর্তে তিন থেকে চার-পাঁচ ধরনের বীজ বপন করা হয়। প্রধানত ধান, ভুট্টা, শসা ও বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ পাহাড়িদের মধ্যে জনপ্রিয়। জুমের মিষ্টি ভুট্টা পাহাড়িরা সেদ্ধ করে খায়, আমরাও খাওয়া শুরু করে দিলাম। পাহাড়িরা বিশেষ এক ধরনের সবজি রান্না করে ৩২ ধরনের তরকারি দিয়ে, সেই পাচন খেলাম আমরা সবাই। বিকেলে চেঙ্গি নদীতে নৌকা ভ্রমণ করে পুরো শহরের এক পাশ দিয়ে ঘুরে এলাম। পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নদীভ্রমণ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। যাঁরা খাগড়াছড়িতে ঘুরতে যাবেন, তাদের প্রতি অনুরোধ রইল, একবার অবশ্যই এটি চেষ্টা করে দেখবেন।
শহরের ভেতরে অসাধারণ সুন্দর পাহাড় আর ধানখেত থাকার কথা শুনে সেদিকে গেলাম। জায়গাটার নাম নিউজিল্যান্ড পাড়া। জানা গেল, অনেক আগে এক পাহাড়ি ভদ্রলোক এই এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের মতো বাতাস;’ সেই থেকে এলাকার নাম হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড পাড়া। আমাদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়ে গেল, যিনি নামটা রেখেছেন, তিনি আদৌ নিউজিল্যান্ডে গিয়েছেন কি না। স্থানীয় বন্ধুদের কাছ থেকে জানা গেল, না, তিনি কখনো নিউজিল্যান্ডে যাননি। তিনি ক্রিকেট খেলা দেখতেন, তা থেকে ধারণা করেছেন, নিউজিল্যান্ডে প্রচুর বাতাস।
এখানে নিউজিল্যান্ড ক্যাফে নামের একটি রেস্তোরাঁ আছে। তাজা ফলের শরবত এবং নানা ধরনের স্ন্যাক্স পাবেন এখানে, ফ্রেঞ্চফ্রাই থেকে শুরু করে হালিম পর্যন্ত। তবে যাওয়ার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য। চার বন্ধুর উদ্যোগে শুরু এই রেস্তোরাঁয় সামনের বার এলে ইন্টারনেটও পাওয়া যাবে বলে জানানো হলো আমাদের।
এই মৌসুমে আসার আরেকটা সুবিধা হলো তাজা, সস্তা ফল। শহরে ঢোকার ঠিক আগে প্রাকৃতিক পরিবেশে আনসারদের একটি অসাধারণ সুন্দর রেস্তোরাঁ আছে। এখানে সব সময় খাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও বসে চেঙ্গি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম প্রতিদিন।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়িতে যাওয়ার বাস আছে। এই বাসগুলো প্রথমে চট্টগ্রামে না গিয়ে সরাসরি ফেনী থেকে রামগড় হয়ে খাগড়াছড়িতে চলে যায়। শান্তি পরিবহন, সৌদিয়া ও এস আলমের সরাসরি বাস আছে। টিকিটের দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। বাসে সরাসরি যেতে আট ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ট্রেন বা প্লেনে চট্টগ্রামে গিয়ে, সেখান থেকেও বাসে যাওয়া যায়, তবে ট্রেনে সময় বেশি লাগবে। থাকার জন্য পর্যটনের হোটেল আছে। খুবই সুন্দর, নদীর ঠিক পাশে। ভাড়া পড়বে দেড় হাজার টাকা, ডাবল বেড এসি রুম। এ ছাড়া শৈল সুবর্ণা আছে, ভাড়া একটু বেশি। শহরের মধ্যে আছে হোটেল জিরান। চাকমা আতিথেয়তা পেতে হলে এখানে থাকতে পারেন। এখানে এসি রুম নেই, ভাড়াও অনেক কম, ৩০০-৫০০ টাকার মধ্যে ডাবল রুম আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের আরও কিছু হোটেল আছে বিভিন্ন ভাড়ার মধ্যে।
যে রাস্তা দিয়ে খাগড়াছড়ি যেতে হয়, সেটাও দেখার মতো। রাঙামাটি অথবা বান্দরবানের মূল শহরে যাওয়ার চেয়ে খাগড়াছড়িতে যেতে অনেক বেশি পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়। এখানে যাওয়ার সময় শুধু পাহাড় নয়; ঝরনা, প্যাগোডা, জুমঘরসহ অনেক কিছুই চোখে পড়বে।
তাই রাস্তায় চোখ খোলা রেখে যেখানে ইচ্ছা থেমে ছবি তুলতে শুরু করে দিলাম। বৃষ্টির সময় পাহাড়গুলোকে সবুজরূপে দেখা গেল। নদী ও ঝরনাগুলোও পরিপূর্ণ প্রমত্ত রূপ নিয়ে হাজির। পথে বেশ কিছু প্যাগোডাও চোখে পড়ল। তবে দিনের আলো থাকতে থাকতে পৌঁছানোর তাড়া থাকায় বেশিক্ষণ থামা গেল না।
পাহাড়ের কোলে দূরে একটি জুমঘর অথবা দূরে পাহাড়ের চূড়ায় কর্মরত পাহাড়িদের দেখতে দেখতে চলে এলাম খাগড়াছড়িতে ঢোকার প্রবেশপথে। আলুটিলাতে স্থানীয় লোকজনকে জিজ্ঞাসা করেও নামকরণের শানে নজুল জানা গেল না। তবে এটুকু জানা গেল, আলুটিলা পার্ক ও এর মধ্যে অবস্থিত গুহা প্রধান পর্যটন স্থানগুলোর মধ্যে অন্যতম।
আলুটিলার গুহাটি পানির স্রোতের কারণে সৃষ্টি। এই গুহার মধ্য দিয়ে পাহাড়ের এক পাশ থেকে আরেক পাশে হেঁটে যাওয়া যায়। এখানে গাইড আছে, মশালও কিনতে পাওয়া যায়। সুতরাং মশাল জ্বালিয়ে গাইডের সঙ্গে আমরা চলে গেলাম হাঁটু পানি ভেঙে গুহার ভেতরে। প্রায় ২৫ থেকে ৩০ মিনিট গুহার ভেতর দিয়ে হাঁটার পর বেরিয়ে এলাম অন্যদিকে, গা ছমছম করা এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা নিয়ে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, ঝড়বৃষ্টির সময় গুহাতে পানির স্রোত অনেক বেশি থাকে এবং মাঝেমধ্যে পুরো গুহা পানিতে ভরে যায়। সে জন্য আকাশ দেখে ঢোকা উচিত। এখানে একটি পিকনিক স্পটও আছে, ভাড়া নিয়ে এটা ব্যবহার করা যায়।
আলুটিলা ঘুরে আমরা হোটেল থেকে হাত-মুখ ধুয়ে বেরিয়ে পড়লাম শহরে ঘুরতে। সৌভাগ্য যে আমাদের, চাকমা বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসেছিলাম। তারা আমাদের প্রথমেই নিয়ে গেল মারমাদের একটি রেস্তোরাঁ ‘সিস্টেম ফ্যামিলি হোটেল’-এ খাওয়ার জন্য।
কখনো ভাবিনি এ রকম একটি ঘরোয়া রেস্তোরাঁ পাব খাগড়াছড়িতে এসে। অনেক বাঙালিও এখানে প্রতিদিন খাওয়ার জন্য আসেন। এখানে বাঙালি খাবারের পাশাপাশি পাহাড়ি খাবারও পাওয়া যায়। আমরা যে যার মতো খেয়ে নিলাম। যেমন, কেউ কপি বাঁশের তরকারি ও মুরগির ঝোল, আবার অনেকে আগ্রহ নিয়ে পাহাড়ি রান্না খেল। যারা ঝাল সহ্য করতে পারে, তাদের জন্য সুবিধা হবে খেতে। কারণ, পাহাড়ি রান্না ঝাল ছাড়া কল্পনাই করা যায় না।
এরপর চলে গেলাম চেঙ্গি নদীর তীরে সময় কাটাতে। বৃষ্টির সময় না এলে চেঙ্গির আসল রূপ দেখা যায় না। সমতলের নদী থেকে এটা পুরো আলাদা—অনেক বেশি বাঁক আর স্রোত। বৃষ্টির পরে প্রমত্তা নদীতে গাছের গুঁড়ি, বাঁশ চোখে পড়ল। তবে বৃষ্টি শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরই চেঙ্গি নদী আবার তার শান্ত রূপে ফিরে এল।
রাতে আমরা জামতলার একটি চাকমা হোটেলে গেলাম। এখানে আমাদের চাকমা বন্ধুদের পরামর্শে ভুনা শামুক খেলাম, চিংড়ি মাছের মতো খেতে। তবে বেশি মিল পাবেন কাঁকড়ার স্বাদের সঙ্গে।
পরদিন সকালে উঠে রওনা দিলাম ছোট মেরুং বাজারের দিকে। এখান থেকে আরও ভেতরে গিয়ে জুম চাষ দেখলাম এবং জুমঘরে বসে পাহাড়ি চাষি ও বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করলাম। এখানকার বেশির ভাগ আদিবাসী সরাসরি জুম চাষের সঙ্গে জড়িত। জুমে প্রথমে পাহাড় পুড়িয়ে জঙ্গল পরিষ্কার করে তার গর্ত করে, প্রতিটি গর্তে তিন থেকে চার-পাঁচ ধরনের বীজ বপন করা হয়। প্রধানত ধান, ভুট্টা, শসা ও বিভিন্ন ধরনের সবজির চাষ পাহাড়িদের মধ্যে জনপ্রিয়। জুমের মিষ্টি ভুট্টা পাহাড়িরা সেদ্ধ করে খায়, আমরাও খাওয়া শুরু করে দিলাম। পাহাড়িরা বিশেষ এক ধরনের সবজি রান্না করে ৩২ ধরনের তরকারি দিয়ে, সেই পাচন খেলাম আমরা সবাই। বিকেলে চেঙ্গি নদীতে নৌকা ভ্রমণ করে পুরো শহরের এক পাশ দিয়ে ঘুরে এলাম। পাহাড়ের মাঝ দিয়ে নদীভ্রমণ এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। যাঁরা খাগড়াছড়িতে ঘুরতে যাবেন, তাদের প্রতি অনুরোধ রইল, একবার অবশ্যই এটি চেষ্টা করে দেখবেন।
শহরের ভেতরে অসাধারণ সুন্দর পাহাড় আর ধানখেত থাকার কথা শুনে সেদিকে গেলাম। জায়গাটার নাম নিউজিল্যান্ড পাড়া। জানা গেল, অনেক আগে এক পাহাড়ি ভদ্রলোক এই এলাকা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের মতো বাতাস;’ সেই থেকে এলাকার নাম হয়ে গেছে নিউজিল্যান্ড পাড়া। আমাদের মধ্যে তর্ক শুরু হয়ে গেল, যিনি নামটা রেখেছেন, তিনি আদৌ নিউজিল্যান্ডে গিয়েছেন কি না। স্থানীয় বন্ধুদের কাছ থেকে জানা গেল, না, তিনি কখনো নিউজিল্যান্ডে যাননি। তিনি ক্রিকেট খেলা দেখতেন, তা থেকে ধারণা করেছেন, নিউজিল্যান্ডে প্রচুর বাতাস।
এখানে নিউজিল্যান্ড ক্যাফে নামের একটি রেস্তোরাঁ আছে। তাজা ফলের শরবত এবং নানা ধরনের স্ন্যাক্স পাবেন এখানে, ফ্রেঞ্চফ্রাই থেকে শুরু করে হালিম পর্যন্ত। তবে যাওয়ার আরেকটি উদ্দেশ্য হচ্ছে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্য। চার বন্ধুর উদ্যোগে শুরু এই রেস্তোরাঁয় সামনের বার এলে ইন্টারনেটও পাওয়া যাবে বলে জানানো হলো আমাদের।
এই মৌসুমে আসার আরেকটা সুবিধা হলো তাজা, সস্তা ফল। শহরে ঢোকার ঠিক আগে প্রাকৃতিক পরিবেশে আনসারদের একটি অসাধারণ সুন্দর রেস্তোরাঁ আছে। এখানে সব সময় খাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও বসে চেঙ্গি নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করলাম প্রতিদিন।
কীভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন
ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়িতে যাওয়ার বাস আছে। এই বাসগুলো প্রথমে চট্টগ্রামে না গিয়ে সরাসরি ফেনী থেকে রামগড় হয়ে খাগড়াছড়িতে চলে যায়। শান্তি পরিবহন, সৌদিয়া ও এস আলমের সরাসরি বাস আছে। টিকিটের দাম ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। বাসে সরাসরি যেতে আট ঘণ্টার মতো সময় লাগে। ট্রেন বা প্লেনে চট্টগ্রামে গিয়ে, সেখান থেকেও বাসে যাওয়া যায়, তবে ট্রেনে সময় বেশি লাগবে। থাকার জন্য পর্যটনের হোটেল আছে। খুবই সুন্দর, নদীর ঠিক পাশে। ভাড়া পড়বে দেড় হাজার টাকা, ডাবল বেড এসি রুম। এ ছাড়া শৈল সুবর্ণা আছে, ভাড়া একটু বেশি। শহরের মধ্যে আছে হোটেল জিরান। চাকমা আতিথেয়তা পেতে হলে এখানে থাকতে পারেন। এখানে এসি রুম নেই, ভাড়াও অনেক কম, ৩০০-৫০০ টাকার মধ্যে ডাবল রুম আছে। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের আরও কিছু হোটেল আছে বিভিন্ন ভাড়ার মধ্যে।
আসিফ মাহফুজ
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০১০
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০১০
No comments:
Post a Comment