Pages

Saturday, July 28, 2012

সাগরপাড়ে পাহাড় ডাকে ওই

Details
পর্যটন নগরী কক্সবাজারের পার্শ্ববর্তী পাহাড়ি দুটি ভ্রমণকেন্দ্র দরিয়ানগর ও হিমছড়ি। কক্সবাজার থেকে খুব সহজেই ঘুরে আসা যায় জায়গা দুটি থেকে।
দরিয়ানগর
কক্সবাজার শহর থেকে মেরিন ড্রাইভ সড়ক ধরে গেলে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পূর্ব দিকে দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্র। পাহাড়ের ঢালে ঢালে সাজানো এ জায়গাটি বেড়ানোর জন্য ভালো জায়গা। জায়গাটির শুরুতেই রয়েছে বিশাল আকারের হা করা হাঙ্গর। এই হাঙ্গরের পেট দিয়েই প্রবেশ করতে হয় জায়গাটিতে। এরপরে পাহাড়েরর গা বেয়ে উপরের দিকে যেতে যেতে রয়েছে কাঠের ট্রেইল, পাহাড়ি ঝরনা, সুড়ঙ্গ পথ ইত্যাদি। কিছু দূর উপরে ওঠার পথে একটি পথ চলে গেছে নিচে আরেকটি উপরের দিকে। নিচেরটি ধরে এগোলে হাতের ডানে দেখা মিলবে ছোট্ট একটি ঝরনার। আর হাতের বাঁ দিকেরটি ধরে নিচে নেমে গেলে পাহাড়ের সুড়ঙ্গ পথ। এ পথের মাথায়ও আছে আরেকটি ঝরনা। পাহাড় বেয়ে একেবারে উপরে উঠে গেলে সামনে নীল সমুদ্র, পেছনে উঁচু নিচু পাহাড়। এখানকার পর্যবেক্ষণ টাওয়ারে বসে উপভোগ করা যায় সাগর আর পাহাড়ের সৌন্দর্য। দরিয়ানগরে আছে বিভিন্ন রকম কটেজ। এগুলোতে থাকারও ব্যবস্থা আছে। এ ছাড়া দরিয়ানগরের সমুদ্র সৈকতটি কক্সবাজারের মতো পর্যটকে ভরপুর থাকে না। যারা নির্জনে বেড়াতে পছন্দ করেন তাদের ভালো লাগবে সৈকতটি। দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্রের প্রবেশ মূল্য বিশ টাকা। কক্সবাজার শহর থেকে ব্যাটারি চালিত রিকশায় দরিয়ানগর যেতে ভাড়া লাগবে ৮০-১০০ টাকা।   
হিমছড়ি
দরিয়ানগর পর্যটন কেন্দ্র থেকে প্রায় চার কিলোমিটার এবং কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র নয় কিলোমিটার দূরে আরেকটি পাহাড়ি পর্যটন কেন্দ্র হিমছড়ি। সমুদ্রের কোল ঘেঁষে এ জায়গাটিও সৌন্দর্যে অনন্য। জায়গাটি যাবার পথটিও বেশ আকর্ষণীয়। আগেই বলা হয়েছে সৈকত লাগোয়া আকাশ ছোঁয়া পাহাড় এখানের অন্যতম আকর্ষণ। এ পাহাড়ে উঠলে চোখের সামনে ভাসবে নীল দিগন্তে হারিয়ে যাওয়া বিশাল সমুদ্র। এখানেও পাহাড়ের চূড়ায় আছে বিশ্রাম কেন্দ্র। পাহাড়ে ওঠার জন্য আছে সিঁড়ি পথ। তবে এ সিঁড়ি পথটিতে ওঠা বেশ কষ্টসাধ্য। হিমছড়ির পাহাড়ের হিম শীতল ঝরনাও বেশ সুন্দর। হিমছড়ির পাহাড়ে ওঠার পথটি হাতের বাঁয়ে রেখে ডানে কিছুদূর চললেই দেখা মেলবে ঝরনার। কক্সবাজার সৈকতের লাবনী পয়েন্ট থেকে দিনের সবসময়ই খোলা জিপ ছাড়ে হিমছড়ির উদ্দেশে। জনপ্রতি ভাড়া ৭০-১০০ টাকা। আর রিজার্ভ নিলে লাগবে ১২০০-১৫০০ টাকা। আর ব্যাটারি চালিত রিকশায় গেলে যাওয়া আসার ভাড়া পড়বে ৪০০-৬০০ টাকা।  
কীভাবে যাবেন
জায়গা দুটিতে যেতে হলে আগে আসতে হবে কক্সবাজার শহরে। সড়কপথে ও আকাশ পথে ঢাকা থেকে সরসরি কক্সবাজার আসা যায়। এ পথে গ্রিন লাইন, সৌদিয়া, সোহাগ, হানিফ, টি আর ইত্যাদি পরিবহন সংস্থার তাপনিয়ন্ত্রিত বিলাসবহুল বাস চলাচল করে। ভাড়া ১১৫০ টাকা ১৫৫০ টাকা। এ ছাড়া এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিক, ঈগল, হানিফ, ইত্যাদি পরিবহনের নন এসি বাসও চলে এ পথে। ভাড়া ৬০০-৭৫০ টাকা। এ ছাড়া ঢাকা থেকে বাংলাদেশ বিমান, ইউনাইটেড এয়ার ও জিএমজি এয়ার ও রিজেন্ট এয়ারের বিমানে সরাসরি যেতে পারেন  কক্সবাজার।
কোথায় থাকবেন
কক্সবাজারে থাকার জন্য এখন প্রচুর হোটেল রয়েছে। ধরন অনুযায়ী এসব হোটেলের প্রতি দিনের কক্ষ ভাড়া ৩০০-২০০০০ টাকা। পাঠকদের সুবিধার জন্য নিচে কয়েকটি হোটেলের ফোন নম্বর দেওয়া হলো। কক্সবাজারে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রয়েছে হোটেল শৈবাল, ফোন :৬৩২৭৪। মোটেল উপল, ফোন :৬৪২৫৮। মোটেল প্রবাল, ফোন :৬৩২১১। মোটেল লাবনী, ফোন :৬৪৭০৩। পর্যটন করপোরেশনের ঢাকাস্থ হেড অফিস থেকেও এসব হোটেলের বুকিং দেওয়া যায়। যোগাযোগ :৮৩-৮৮, মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন- ৯৮৯৯২৮৮-৯১। এ ছাড়া অন্যান্য হোটেল হলো হোটেল সি গাল, (পাঁচ তারা), ফোন :৬২৪৮০-৯১, ঢাকা অফিস :৮৩২২৯৭৩-৬। হোটেল সায়মন, ফোন :৬৩২৩৫, ঢাকা অফিস :৮৬১৪৫৬৫। হোটেল সি কুইন, ফোন :৬৩৭৮৯, ৬৩৮৭৮। হোটেল সাগর গাঁও লি. ফোন :৬৩৪৪৫, ৬৩৪২৮। সুগন্ধা গেস্ট হাউস, ফোন :৬২৪৬৬। জিয়া গেস্ট ইন, ফোন :৬৩৯২৫। হোটেল সি হার্ট, ফোন :৬২২৯৮। হোটেল ডায়মন্ড পে­স অ্যান্ড গেস্ট হাউস, ফোন :৬৩৬৪২। গেস্ট কেয়ার লি. ফোন :৬৩৯৩০। হোটেল প্যানওয়া লি. ফোন :৬৪৪৩০। কক্সবাজারের এনডব্লিউডি কোড-০৩৪১।

লেখক: আলোকচিত্র ও লেখা মুস্তাফিজমামুন  |  শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১২, ১২ শ্রাবণ ১৪১৯

No comments:

Post a Comment