Pages

Friday, July 27, 2012

ধামরাইয়ে রথের মেলা


ঢাকা জেলার ধামরাইয়ে ঐতিহ্যবাহী রথের মেলা চলে আসছে বহুকাল ধরে। দেশের সবচেয়ে বড় ‘শ্রী শ্রী যশোমাধবের রথযাত্রা’ উত্সবটি বসে এখানেই। আর এ উপলক্ষে বসেছে মাসব্যাপী মেলা। এ বছর রথের যাত্রা হয়েছে গত ২১ জুন। আগামী ২৯ জুন শুক্রবার রয়েছে উল্টো রথযাত্রা। কড়চার এবারের বেড়ানো ধামরাইয়ে রথের মেলায়।
প্রতি বছর আষাঢ়ের শুক্লা দ্বিতীয়ার্ধে ধামরাইয়ে রথযাত্রা উত্সব শুরু হয়। এদিন রথের শীর্ষে দেবতাদের মূর্তি উঠিয়ে রথটানা হয়। লাখো হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা এদিন ধামরাইয়ে সমবেত হন রথ টানতে। ধামরাই বাজারের এক প্রান্তে মাধব মন্দিরের সামনে থেকে  এদিন রথটিকে টেনে এনে রাখা হয় বাজারের অপর প্রান্তে এবং ওই পক্ষের দশমীতে পুনরায় ওই রথটি টেনে পূর্বের স্থানে আনা হয়। যা উল্টো রথযাত্রা নামে পরিচিত।
প্রায় সাড়ে ৩শত বত্সর আগে ধামরাইয়ে তৈরি হয়েছিল প্রথম রথ। বিশাল ৭ তলা রথ নির্মাণ করেছিলেন মানিকগঞ্জের বালিয়াটির তত্কালীন জমিদারগণ। প্রাচীন রথের উচ্চতা ছিল ৬০ ফুট। এই রথটি ’৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে ধ্বংস করে দেয়। এর পরে প্রায় ২৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট একটি কাঠের তৈরি ক্ষুদ্র রথের রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হতো। এ বছর ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় প্রায় কোটি টাকা খরচ করে আদি রথের অনুরূপ একটি রথ নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় ৪০ ফুট উঁচু এবং ২০ ফুট চওড়া কাঠের তৈরি এ রথের চারপাশে খোদাই করা হয়েছে বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিকৃতি।
রথযাত্রা উপলক্ষে ধামরাইয়ে মাসব্যাপী গ্রামীণ ও কুটির শিল্প মেলা অনুষ্ঠিত হয়। এ মেলায় বিভিন্ন হস্তশিল্পের দ্রব্যাদি, মৃিশল্প, বস্ত্র, ব্যাগ, বেতের, কাঁসা ও পিতলের দ্রব্যাদি চুড়ি ও নানা রকমের খেলনা, মিষ্টিজাতীয় দ্রব্যাদির সমারোহ ঘটে। এ ছাড়া পুতুল নাচ, যাত্রাপালা, সার্কাস ইত্যাদিও থাকে এ মেলার আয়োজনে। 
কীভাবে যাবেন
ঢাকার গুলিস্তান থেকে শুভযাত্রা, বিআরটিসি পরিবহন, গাবতলী থেকে যাত্রীসেবা, নবীন বরণ, ভিলেজ লাইন, জনসেবা পরিবহন, বাবু বাজার থেকে শুকতারা পরিবহনে চড়ে যাওয়া যায় ধামরাই। এ ছাড়াও ঢাকা থেকে মানিকগঞ্জ ও আরিচাগামী যেকোনো বাসে উঠেই নামতে পারেন ধামরাই বাস স্টেশন। ভাড়া ৪০-৫০ টাকা। সেখান  থেকে পায়ে হেঁটে কিংবা রিকশায় ধামরাই বাজার।

লেখক: আলোকচিত্র ও লেখা: মুস্তাফিজ মামুন  |  শুক্রবার, ২৭ জুলাই ২০১২, ১২ শ্রাবণ ১৪১৯

No comments:

Post a Comment