‘দাঁড়াও পথিকবর জন্ম যদি তব বঙ্গে তিষ্ঠ ক্ষণকাল…’
সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভিটায় শ্বেতপাথরে তাঁর এই কবিতার পঙিক্ত পড়লেই ক্ষণকাল দাঁড়াতেই হয়। ঘুরে ঘুরে দেখতে ইচ্ছা করে বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মাইকেল মদুসদন দত্তের এই পেত্রিক ভিটা। যার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কপোতাক্ষ নদ।মহাকবির ১৮৭তম জন্মবার্ষিক উপলক্ষে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে এখন চলছে সাত দিনের ‘মধুমেলা’।
এ মেলায় এখন উৎসবের আমেজ। সাগরদাঁড়ির জমিদারবাড়ির আঙিনায় উপলক্ষে বসে এ মেলা।কবির জন্মদিন আজ ২৫ জানুয়ারি। তবে মেলা শুরু হয়েছে ২২ জানুয়ারি থেকে। চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়ি সেজেছে নতুন সাজে।তাই মহাকবির জন্মভিটা দেখা আর মেলার উৎসবে যোগ দেওয়ার সুযোগটা এখনই। কবির বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষেই বসেছে মেলার স্টল। সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন ইনিস্টিটিউশনের মাঠজুড়েও মেলার আয়োজন। মেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০০টি স্টল।লোকজ মেলার সব উপাদানই আছে এ আয়োজনে। কুটির শিল্পের স্টলে শোভা পাচ্ছে কেশবপুরের কারুপল্লীর কাঠের তৈরি ফুলদানি, কলমদানি, পুতুল, ছোট হাঁড়িসহ নানা জিনিসপত্র। তা ছাড়া গ্রামীণ পণ্যের সমাহার তো রয়েছেই।
এ সময় পর্যটকেরা এলে মধুসূদনের জন্মস্থান, মেলা দুটোই উপভোগ করতে পারেন। সাগরদাঁড়ি এখন হাজারো মধুভক্তের পদচারণে মুখরিত। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র টিপু সুলতান বলেন, ‘অনেক সুন্দর জায়গা। এখন ভাবছি আরও আগে আসা উচিত ছিল।’ ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আসা ঝিনুকের স্টলমালিক মতিন মিয়া জানান, ২২ তারিখ থেকে মেলা শুরু হওয়ায় প্রথমের দুই-এক দিন লোকসমাগম কিছুটা কম হলেও এখন মানুষের উপস্থিতি অনেক বেশি।
মেলায় জেলা পরিষদ নির্মিত মধুমঞ্চে প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। এ ছাড়া মেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাত্রা, সার্কাস, পুতুলনাচ, জাদু প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মধুসূদন সম্পর্কে জানার জন্য উপজেলা প্রশাসন মধুমঞ্চের পাশে এবারই প্রথম একটি স্টলে কবির সাহিত্যকর্ম, জীবনীসহ নানা বিষয়ে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দর্শকদের জানানোর ব্যবস্থা করেছে। এ প্রসঙ্গে মেলার সদস্যসচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদা সুলতানা বলেন, ‘মেলায় বিনোদনের অনেক ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কবির সম্পর্কে জানার তেমন ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মেলায় আগতদের কিছুটা হলেও জানানোর ব্যবস্থা করেছি।’
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ অধিগ্রহণ করেছে। এখানে তৈরি করা হয়েছে মধুপল্লি। বাড়িতে ঢুকতেই চোখে পড়ে কবির আবক্ষ মূর্তি। বাড়ির উঠোনে জমিদারবাড়ির ঠাকুরঘর। তারপর প্রতিটি ঘরে কবির ব্যবহূত বিভিন্ন আসবাব রয়েছে। কবির বাড়ির পূর্ব ও পশ্চিম পাশ দিয়ে সরু ধারায় বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনেই রয়েছে স্মৃতিময় বাদামগাছ। যেখানে বসে কবিকে ভাবিয়ে তুলত তাঁর ভবিষ্যতের স্বপ্ন। এর পেছনেই রয়েছে বিদায়ঘাট। যেখানে মধুসূদন কলকাতা থেকে স্ত্রী হেনরিয়েটা, সন্তান মেঘনাদ মিল্টন দত্ত ও শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু জমিদার বাবা তাঁকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেননি। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তিন দিন ধরে এখানে অবস্থান করেন। মধুসূদন ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন, মারা যান ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি যেতে হলে প্রথমে যশোরে আসতে হবে, যশোর বাস টার্মিনাল থেকে বাসে কেশবপুর আসতে হবে। ৩২ কিলোমিটার পথের বাসভাড়া ২৫-৩০ টাকা। এরপর কেশবপুর থেকে পশ্চিমে ১২ কিলোমিটার ব্যাটারিচালিত গাড়ি অথবা ভ্যানে যাওয়া য়ায়। ভাড়া ২০ টাকা। সাগরদাঁড়িতে থাকার জন্য পর্যটনের একটি মোটেল আছে। ভাড়া ৩০০ টাকা। এ ছাড়া যশোরে থাকার জন্য অনেক ভালো হোটেল আছে।
সাগরদাঁড়িতে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের জন্মভিটায় শ্বেতপাথরে তাঁর এই কবিতার পঙিক্ত পড়লেই ক্ষণকাল দাঁড়াতেই হয়। ঘুরে ঘুরে দেখতে ইচ্ছা করে বাংলা কবিতায় অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক মাইকেল মদুসদন দত্তের এই পেত্রিক ভিটা। যার পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে কপোতাক্ষ নদ।মহাকবির ১৮৭তম জন্মবার্ষিক উপলক্ষে যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়িতে এখন চলছে সাত দিনের ‘মধুমেলা’।
এ মেলায় এখন উৎসবের আমেজ। সাগরদাঁড়ির জমিদারবাড়ির আঙিনায় উপলক্ষে বসে এ মেলা।কবির জন্মদিন আজ ২৫ জানুয়ারি। তবে মেলা শুরু হয়েছে ২২ জানুয়ারি থেকে। চলবে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত।
মেলা উপলক্ষে সাগরদাঁড়ি সেজেছে নতুন সাজে।তাই মহাকবির জন্মভিটা দেখা আর মেলার উৎসবে যোগ দেওয়ার সুযোগটা এখনই। কবির বাড়ির সীমানাপ্রাচীর ঘেঁষেই বসেছে মেলার স্টল। সাগরদাঁড়ি মাইকেল মধুসূদন ইনিস্টিটিউশনের মাঠজুড়েও মেলার আয়োজন। মেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে ৫০০টি স্টল।লোকজ মেলার সব উপাদানই আছে এ আয়োজনে। কুটির শিল্পের স্টলে শোভা পাচ্ছে কেশবপুরের কারুপল্লীর কাঠের তৈরি ফুলদানি, কলমদানি, পুতুল, ছোট হাঁড়িসহ নানা জিনিসপত্র। তা ছাড়া গ্রামীণ পণ্যের সমাহার তো রয়েছেই।
এ সময় পর্যটকেরা এলে মধুসূদনের জন্মস্থান, মেলা দুটোই উপভোগ করতে পারেন। সাগরদাঁড়ি এখন হাজারো মধুভক্তের পদচারণে মুখরিত। রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র টিপু সুলতান বলেন, ‘অনেক সুন্দর জায়গা। এখন ভাবছি আরও আগে আসা উচিত ছিল।’ ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে আসা ঝিনুকের স্টলমালিক মতিন মিয়া জানান, ২২ তারিখ থেকে মেলা শুরু হওয়ায় প্রথমের দুই-এক দিন লোকসমাগম কিছুটা কম হলেও এখন মানুষের উপস্থিতি অনেক বেশি।
মেলায় জেলা পরিষদ নির্মিত মধুমঞ্চে প্রতিদিন বিষয়ভিত্তিক আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে। এ ছাড়া মেলার মাঠের পাশ দিয়ে যাত্রা, সার্কাস, পুতুলনাচ, জাদু প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মধুসূদন সম্পর্কে জানার জন্য উপজেলা প্রশাসন মধুমঞ্চের পাশে এবারই প্রথম একটি স্টলে কবির সাহিত্যকর্ম, জীবনীসহ নানা বিষয়ে প্রজেক্টরের মাধ্যমে দর্শকদের জানানোর ব্যবস্থা করেছে। এ প্রসঙ্গে মেলার সদস্যসচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শহিদা সুলতানা বলেন, ‘মেলায় বিনোদনের অনেক ব্যবস্থা আছে, কিন্তু কবির সম্পর্কে জানার তেমন ব্যবস্থা নেই। তাই আমরা উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে মেলায় আগতদের কিছুটা হলেও জানানোর ব্যবস্থা করেছি।’
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়িটি প্রত্নতত্ত্ব ও জাদুঘর বিভাগ অধিগ্রহণ করেছে। এখানে তৈরি করা হয়েছে মধুপল্লি। বাড়িতে ঢুকতেই চোখে পড়ে কবির আবক্ষ মূর্তি। বাড়ির উঠোনে জমিদারবাড়ির ঠাকুরঘর। তারপর প্রতিটি ঘরে কবির ব্যবহূত বিভিন্ন আসবাব রয়েছে। কবির বাড়ির পূর্ব ও পশ্চিম পাশ দিয়ে সরু ধারায় বয়ে গেছে কপোতাক্ষ নদ। জেলা পরিষদ ডাকবাংলোর সামনেই রয়েছে স্মৃতিময় বাদামগাছ। যেখানে বসে কবিকে ভাবিয়ে তুলত তাঁর ভবিষ্যতের স্বপ্ন। এর পেছনেই রয়েছে বিদায়ঘাট। যেখানে মধুসূদন কলকাতা থেকে স্ত্রী হেনরিয়েটা, সন্তান মেঘনাদ মিল্টন দত্ত ও শর্মিষ্ঠাকে নিয়ে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। কিন্তু জমিদার বাবা তাঁকে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে দেননি। জনশ্রুতি রয়েছে, তিনি মায়ের সঙ্গে দেখা করতে না পেরে তিন দিন ধরে এখানে অবস্থান করেন। মধুসূদন ১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন, মারা যান ১৮৭৩ সালের ২৯ জুন।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাড়ি যেতে হলে প্রথমে যশোরে আসতে হবে, যশোর বাস টার্মিনাল থেকে বাসে কেশবপুর আসতে হবে। ৩২ কিলোমিটার পথের বাসভাড়া ২৫-৩০ টাকা। এরপর কেশবপুর থেকে পশ্চিমে ১২ কিলোমিটার ব্যাটারিচালিত গাড়ি অথবা ভ্যানে যাওয়া য়ায়। ভাড়া ২০ টাকা। সাগরদাঁড়িতে থাকার জন্য পর্যটনের একটি মোটেল আছে। ভাড়া ৩০০ টাকা। এ ছাড়া যশোরে থাকার জন্য অনেক ভালো হোটেল আছে।
দিলীপ মোদক
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৫, ২০১০
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জানুয়ারী ২৫, ২০১০
No comments:
Post a Comment